(+88) 01715 177776 contact@obonil.com
Not registered yet?
Register now! It is easy and done in 1 minute and gives you access to special discounts and much more!
নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য শিগগিরই ব্যবহার হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সরকারিভাবে অ্যাপটি বাস্তবায়ন ও কার্যকরী করার কথা জানিয়েছেন। এছাড়া, পুলিশের সিআইডি হেড কোয়ার্টারের সাইবার ক্রাইম ইনফরমেশন সেন্টার থেকে অ্যাপটি পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে ইতিবাচক অনুমতি দিয়েছে। সরকারের চূড়ান্ত অনুমতি সাপেক্ষে অ্যাপটি মার্কেটপ্লেসে আনা হবে। ঢাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রকৌশল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাদ্দাম হোসেন শাহীন অ্যাপটি তৈরি করেছেন। তিনি জানান, ২০১২ সালে একদিন ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে নিজের মোবাইল ফোন ও টাকা খোয়ান তিনি। এরপর ঠিক করেন, জিপিএস প্রযুক্তির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংযুক্ত করা গেলে নিরাপত্তার বিষয়টি কিছুটা হলেও নিশ্চিত করা যায়। ২০১২ সাল থেকেই জিপিএস পদ্ধতি ব্যবহার করে অ্যাপটি তৈরির কাজ শুরু করেন সাদ্দাম। অ্যাপটি তৈরি করতে দুই বছরের বেশি সময় লেগেছে সাদ্দামের। এখনও অ্যাপটির আরো উন্নত সংস্করণ তৈরিতে কাজ করছেন তিনি। অ্যাপটি জননিরাপত্তামূলক ও অপরাধ দমন-সংক্রান্ত হওয়ায় গুগল প্লে-স্টোর বা অন্যান্য মার্কেটপ্লেসে দিতে গেলে পুলিশ সদর দপ্তর বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কারণ, অ্যাপটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা প্রথমে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাবে এবং বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিটির সহায়তায় এগিয়ে আসবে। এ জন্য পুলিশ সদর দপ্তর ও তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্ভাবনী অনুদানে প্রকল্পে আবেদন করেছেন অ্যাপটির ডেভেলপার সাদ্দাম। ইতিমধ্যে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সরকারিভাবে অ্যাপটি বাস্তবায়ন ও কার্যকরী করার কথা জানিয়েছেন বলে জানান সাদ্দাম। যেভাবে কাজ করবে সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপ অ্যাপসটি কিভাবে কাজ করবে জানতে চাইলে সাদ্দাম বলেন, অ্যাপটি প্রথমে স্মার্টফোনে ইনস্টল করতে হবে। এর দুটি অংশ। একটা হচ্ছে ক্লায়েন্ট বা ইউজার অ্যাপস, যা ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে থাকবে। আরেকটি হচ্ছে সার্ভার অ্যাপ বা নোটিফিকেশন রিসিভার অ্যাপ, যেটি পুলিশের কাছে বা পুলিশ স্টেশনে থাকবে। এরপর অ্যাপটি অ্যানাবেল (সক্রিয়) করতে হবে। নির্দিষ্ট বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে অ্যাপসটি সক্রিয় রাখতে হবে। সেবা পাওয়ার জন্য অ্যাপসটিকে সব সময় সক্রিয় রাখতে হবে, যাতে করে যে কোনো বিপদের সময় নির্দিষ্ট পাওয়ার বাটনটি পরপর চারবার চাপার সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ বার্তা (নোটিফিকেশন) পৌঁছে যায়। চারবার বাটন চাপার সংখ্যাটি শিগগিরই আরো কমিয়ে আনা হবে বলে জানান তিনি। বিপদে পড়লে বা অপরাধীদের আক্রমণের শিকার হলে আক্রান্ত ব্যক্তি তার কাছে মোবাইল ফোনে থাকা সেলফ প্রোটেক্ট অ্যাপের নির্দিষ্ট বাটনটি চাপলে অ্যাপটি প্রথমে ব্যক্তির সবচেয়ে কাছের পুলিশ স্টেশনটির অ্যাপ খুঁজে বের করবে। তারপর জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ স্টেশনের সার্ভারে জানাবে। ব্যবহারকারী যে এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানকার আশেপাশের শব্দ ও ছবি ধারণ করে পুলিশ স্টেশনে পাঠাবে অ্যাপটি, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির সাহায্যার্থে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারে। মেহেরপুরের ছেলে সাদ্দাম বলেন, পুলিশ স্টেশনের অ্যাপের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও একই বার্তা মোবাইলে পৌঁছে যাবে টেক্সট মেসেজ আকারে। সার্ভারে পৌঁছানোর পর সংশ্লিষ্ট থানায় দায়িত্বরত নির্দিষ্ট সংখ্যক অফিসারের মোবাইল নম্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির নোটিফিকেশনটি টেক্সট মেসেজ আকারে পৌঁছে যাবে। তিনি জানান, অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীর কোনো ইন্টারনেট কানেকশন বা ডাটা অন থাকার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট কানেকশন অফ থাকলেও জিপিএস চালু থাকার কারণে সার্ভিস প্রোভাইডার বা মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে বার্তাটি পুলিশ স্টেশনে পৌঁছাবে। তবে সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন বা পুলিশের কাছে থাকা অ্যাপে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে, যেন ব্যবহারকারী বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ বার্তাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধ সংঘটিত হওয়ার স্থানটি গুগল ম্যাপে দেখে শনাক্ত করা যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি একবার নির্দিষ্ট বাটন প্রেস করার মাধ্যমে যেভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য পুলিশের কাছে পৌঁছে যাবে, তেমনি ছিনতাইকারীরা ওই ব্যক্তির হ্যান্ডসেট থেকে সিম পরিবর্তন করলেও নির্দিষ্ট সময় পরপর ছিনতাইকারীর অবস্থানের তথ্য নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনের সার্ভারে আসতে থাকবে। স্মার্টফোন ছাড়া সাধারণ ফিচার ফোনগুলোর জন্য সেটআপ টেক্সট অপশন থাকবে, যাতে করে টেক্সটটি নির্দিষ্ট এসএমএস সার্ভার নম্বরের মাধ্যমে পুলিশের সার্ভারে পৌঁছে যাবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের তুলনায় ফিচার ফোন ব্যবহারকারীরা একটু দেরিতে সেবা পাবেন। অ্যাপটি ডেভেলপ করা হয়েছে অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য। এর পাশাপাশি উইন্ডোজ আর আইওএসের জন্যও অ্যাপটি ডেভেলপ করার কাজ চলছে।