(+88) 01715 177776 contact@obonil.com
Not registered yet?
Register now! It is easy and done in 1 minute and gives you access to special discounts and much more!
মোহাম্মদ শাহজালাল
মানুষের জীবনের একটি অন্যতম গুরত্বপূর্ণ বিষয় হলো তার নিরাপত্তা। কীভাবে মানুষের নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে চলছে অনেক গবেষণা। চলাফেরার সময় আক্রমণের শিকার হলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেবা পাওয়ার একটি উপায় হচ্ছে ‘সেলফ প্রোটেক্ট অ্যাপ’। ‘২০১২ সালে একদিন ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে আমার মোবাইল ফোন ও টাকা খোয়াই। এরপর জিপিএস প্রযুক্তির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ও নিজের পরিবার-বন্ধুদের সংযুক্ত করে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার ভাবনা আমার মাথায় আসে।’, অ্যাপটি তৈরির পেছনের কথা বলতে গিয়ে এ তথ্য জানান নির্মাতা মো. সাদ্দাম হোসেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালে অ্যাপটি তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। ‘২০১৪ সালের আইসিটি বিভাগ থেকে পরিচালিত অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে আমার এই আইডিয়ার কথা জানালে প্রশিক্ষকরা আইডিয়াটিকে অ্যাপে রুপান্তরিত করার জন্য উত্সাহিত করেন ও সহযোগিতা করেন। সিএসই’র ছাত্র হওয়ায় আমার জন্য কাজটি আরও সহজ হয়ে যায়।’, বলেন সাদ্দাম। বর্তমানে অ্যাপটির আরো উন্নত সংস্করণ তৈরির কাজ করছেন তিনি।অ্যাপটি যেভাবে কাজ করে সাদ্দাম জানান, অ্যাপটির দুটি অংশ আছে। একটা হচ্ছে ক্লায়েন্ট বা ইউজার অ্যাপ, যা ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে থাকবে। আরেকটি হচ্ছে ওয়েব অ্যাপ বা নোটিফিকেশন রিসিভার অ্যাপ, যেটি পুলিশের কাছে বা পুলিশ স্টেশনে থাকবে। এরপর অ্যাপটি সক্রিয় করতে হবে। নির্দিষ্ট সেটিংস বাটনে জেনারেল ও অ্যাডভান্সড সেটিংসে ব্যবহারকারী নোটিফিকেশনে কী কী পাঠাতে চান (লোকেশন, আইএমইআই, অডিও, ভিডিও, ছবি, ফোন নাম্বার, সোশ্যাল মিডিয়াতে নোটিফিকেশন পোস্ট ইত্যাদি) সেগুলোর বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে অন করতে হবে ও অ্যাপটি সক্রিয় রাখতে হবে। সেবা পাওয়ার জন্য অ্যাপটিকে সব সময় সক্রিয় রাখতে হবে যেন যেকোনো বিপদের সময় নির্দিষ্ট পাওয়ার বাটনটি পরপর ৪-৫ বার চাপার সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে ও অ্যাপে সরবরাহকৃত পরিবার ও বন্ধুদের নাম্বারে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে। নিকটস্থ থানায় পৌঁছার জন্য নোটিফিকেশনটি সেন্ট্রাল সার্ভারে পৌঁছাবে। এরপর সবচেয়ে কাছের থানার ওয়েব অ্যাপ খুঁজে বের করবে সেন্ট্রাল সার্ভার। পরবর্তীতে জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করে থানায় থাকা সার্ভারে জানাবে। ব্যবহারকারী যে এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানকার আশেপাশের শব্দ ও ছবি ধারণ করে থানায় পাঠাবে অ্যাপটি, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির সাহায্যার্থে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারে। থানার অ্যাপের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও একই বার্তা মোবাইলে পৌঁছে যাবে টেক্সট মেসেজ আকারে। সার্ভারে পৌছানোর পর সংশ্লিষ্ট থানায় দায়িত্বরত নির্দিষ্ট সংখ্যক অফিসারের মোবাইল নম্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির নোটিফিকেশনটি টেক্সট মেসেজ আকারে পৌঁছে যাবে। সেলফ প্রোটেক্ট অ্যাপ ইনস্টল করা থাকলে ফোনটি থেকে সিম পরিবর্তন করলে নতুন সিম নম্বর, আইএমইআই, লোকেশেন নির্দিষ্ট নম্বরে নোটিফিকেশন আকারে চলে যাবে বলে জানান সাদ্দাম। এতে করে হারিয়ে যাওয়া ফোনে কোন সিম ব্যবহার হচ্ছে তা শনাক্ত করা ও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও জিপিএস চালু থাকার কারণে সার্ভিস প্রোভাইডার বা মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে বার্তাটি থানায় পৌঁছাবে। তবে সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন বা পুলিশের কাছে থাকা অ্যাপে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে, যেন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার স্থানটি গুগল ম্যাপে দেখে শনাক্ত করা যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি একবার নির্দিষ্ট পাওয়ার বাটন প্রেস করার মাধ্যমে যেভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য পুলিশের কাছে পৌঁছে যাবে, তেমনি ছিনতাইকারীরা ওই ব্যক্তির হ্যান্ডসেট থেকে সিম পরিবর্তন করলেও নির্দিষ্ট সময় পরপর ছিনতাইকারীর অবস্থানের তথ্য নিকটস্থ থানার সার্ভারে আসতে থাকবে। স্মার্টফোন ছাড়া সাধারণ ফিচার ফোনগুলোর জন্য সেটআপ টেক্সট অপশন থাকবে, যাতে করে টেক্সটটি নির্দিষ্ট এসএমএস সার্ভার নম্বরের মাধ্যমে পুলিশের সার্ভারে পৌঁছাবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের তুলনায় ফিচার ফোন ব্যবহারকারীরা একটু দেরিতে সেবা পাবেন। অ্যাপটি ডেভেলপ করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য। এর পাশাপাশি উইন্ডোজ আর আইওএসের জন্যও অ্যাপটি তৈরির কাজ চলছে। নিকটস্থ প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে সার্চ নিয়ারেস্ট বাটনে ক্লিক করে। কোন বিষয় সার্ভারে সরাসরি পাঠানোর জন্য লাইভ স্ট্রিমিং বাটনে ক্লিক করলে সেবা পাওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়াও জনসাধারণের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আরো কিছু ফিচার যোগ করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সরকারিভাবে অ্যাপটি বাস্তবায়ন ও কার্যকরী করার কথা জানিয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের সিআইডি হেডকোয়ার্টারের সাইবার ক্রাইম ইনফরমেশন সেন্টার থেকে অ্যাপটি পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে ইতিবাচক অনুমতি দিয়েছে। সরকারের চূড়ান্ত অনুমতি সাপেক্ষে অ্যাপটি মার্কেটপ্লেসে আনা হবে বলে জানান সাদ্দাম।