(+88) 01715 177776      contact@obonil.com

News Detail

‘সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপ’ বানালো বাংলাদেশি তরুণ

Publish at September 22, 2016


কাঞ্জিলাল রায় জীবন

 নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন । মানুষের জীবনের একটি অন্যতম গুরত্বপূর্ণ বিষয় হল তার নিরাপত্তা । বহুকাল ধরেই গবেষণা চলছে কীভাবে মানুষের নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত করা যায় । আর আমাদের নিরাপত্তা কে আরো সহজ করতেই আমাদের দেশেরই তরুণ নিয়ে এলো ‘সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপ’। অ্যাপটি বানিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ (শেষ বর্ষ ) এর শিক্ষার্থী মো: সাদ্দাম হোসেন । অ্যাপটি নিয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান ‘২০১২ সালে একদিন ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে আমার মোবাইল ফোন ও টাকা খোয়াই । এরপর জিপিএস প্রযুক্তির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ও নিজের পরিবার-বন্ধুদের সংযুক্ত করা গেলে নিরাপত্তার বিষয়টি কিছুটা হলেও নিশ্চিত করা যায়।২০১৪ সাল থেকে সেলফ প্রোটেক্ট’র কাজ শুরু করি।’ অ্যাপটি নিয়ে তার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘ অ্যাপটি জননিরাপত্তামূলক ও অপরাধ দমন-সংক্রান্ত হওয়ায় গুগল প্লে­-স্টোর বা অন্যান্য মার্কেটপ্লে­সে দিতে গেলে পুলিশ সদর দপ্তর বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এ জন্য তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ১০০০ ইনোভেশন, ২০২১ প্রকল্পে এই উদ্ভাবনে অনুদানের জন্য ও পুলিশ সদর দপ্তরে আবেদন করেছি অ্যাপকে কার্যকরী করার জন্য।’ তিনি বর্তমানে অ্যাপটির উন্নত সংস্করনের জন্য কাজ করছেন ।

অ্যাপসটি কিভাবে কাজ করবে : “ সেলফ প্রটেক্ট ” অ্যাপটি প্রথমে স্মার্টফোনে ইনস্টল করতে হবে। এর দুটি অংশ। একটা হচ্ছে ক্লায়েন্ট বা ইউজার অ্যাপস, যা ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে থাকবে। আরেকটি হচ্ছে ওয়েব অ্যাপ বা নোটিফিকেশন রিসিভার অ্যাপ, যেটি পুলিশের কাছে বা পুলিশ স্টেশনে থাকবে। এরপর অ্যাপটি অ্যানাবেল (সক্রিয়) করতে হবে। নির্দিষ্ট সেটিংস বাটনে জেনারেল ও অ্যাভান্সড সেটিংস এ ব্যবহারকারী নোটিফিকেশনে কি কি পাঠাতে চাই যেমন লোকেশন, আইএমআই, অডিও,ভিডিও,ছবি,ফোন নাম্বার, সোস্যাল মিডিয়াতে নোটিফিকেশন পোস্ট ইত্যাদি) সেগুলো বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে অন করতে হবে ও অ্যাপসটি সক্রিয় রাখতে হবে। সেবা পাওয়ার জন্য অ্যাপসটিকে সব সময় সক্রিয় রাখতে হবে, যাতে করে যে কোনো বিপদের সময় নির্দিষ্ট পাওয়ার বাটনটি পরপর ৪-৫ বার চাপার সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে ও অ্যাপ এ সরবরাহকৃত পরিবার ও বন্ধুদের নাম্বারে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ বার্তা (নোটিফিকেশন) পৌঁছে যাবে। নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে পৌছার জন্য নোটিফিকেশনটি সেন্ট্রাল সার্ভার এ পৌছাবে তারপর অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিকটিমের নিকটস্থ থানার ওয়েব অ্যাপ পৌছাবে। র্ বিপদে পড়লে বা অপরাধীদের আক্রমণের শিকার হলে আক্রান্ত ব্যক্তি তার কাছে মোবাইল ফোনে থাকা সেলফ প্রোটেক্ট অ্যাপের নির্দিষ্ট পাওয়ার বাটনটি চাপলে অ্যাপটি প্রথমে ব্যক্তির সবচেয়ে কাছের পুলিশ স্টেশনটির ওয়েব অ্যাপ খুঁজে বের করবে সেন্ট্রাল সার্ভার। তারপর জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ স্টেশনের সার্ভারে জানাবে। ব্যবহারকারী যে এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানকার আশেপাশের শব্দ ও ছবি ধারণ করে পুলিশ স্টেশনে পাঠাবে অ্যাপটি, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির সাহায্যার্থে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারে। পুলিশ স্টেশনের অ্যাপের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও একই বার্তা মোবাইলে পৌঁছে যাবে টেক্সট মেসেজ আকারে। সার্ভারে পৌঁছানোর পর সংশ্লিষ্ট থানায় দায়িত্বরত নির্দিষ্ট সংখ্যক অফিসারের মোবাইল নম্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির নোটিফিকেশনটি টেক্সট মেসেজ আকারে পৌঁছে যাবে। সেলফ প্রটেক্ট অ্যাপ ইনস্টল করা থাকলে ফোনটি থেকে সিম পরিবর্তন করলে নতুন সিম নাম্বার, আইএম আই,লোকেশেন পরিবার-বন্ধুদের নাম্বারে নোটিফিকেশন আসবে। যাতে করে হারিয়ে যাওয়া ফোনটি কোন সিম ব্যবহার হচ্ছে সনাক্ত করা ও খুজে পাওযা সম্ভব। অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীর কোনো ইন্টারনেট কানেকশন বা ডাটা অন থাকার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট কানেকশন অফ থাকলেও জিপিএস চালু থাকার কারণে সার্ভিস প্রোভাইডার বা মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে বার্তাটি পুলিশ স্টেশনে পৌঁছাবে। তবে সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন বা পুলিশের কাছে থাকা অ্যাপে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে, যেন ব্যবহারকারী বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ বার্তাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধ সংঘটিত হওয়ার স্থানটি গুগল ম্যাপে দেখে শনাক্ত করা যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি একবার নির্দিষ্ট পাওয়ার বাটন প্রেস করার মাধ্যমে যেভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য পুলিশের কাছে পৌঁছে যাবে, তেমনি ছিনতাইকারীরা ওই ব্যক্তির হ্যান্ডসেট থেকে সিম পরিবর্তন করলেও নির্দিষ্ট সময় পরপর ছিনতাইকারীর অবস্থানের তথ্য নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনের সার্ভারে আসতে থাকবে। স্মার্টফোন ছাড়া সাধারণ ফিচার ফোনগুলোর জন্য সেটআপ টেক্সট অপশন থাকবে, যাতে করে টেক্সটটি নির্দিষ্ট এসএমএস সার্ভার নম্বরের মাধ্যমে পুলিশের সার্ভারে পৌঁছে যাবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের তুলনায় ফিচার ফোন ব্যবহারকারীরা একটু দেরিতে সেবা পাবেন। অ্যাপটি ডেভেলপ করা হয়েছে অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য। এর পাশাপাশি উইন্ডোজ আর আইওএসের জন্যও অ্যাপটি ডেভেলপ করার কাজ চলছে। এছাড়া অ্যাটিতে ইমারজেন্সী সার্ভিস যেমন হাসপাতাল,ফায়ার সার্ভিস, কোন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ, পরামর্শ ইত্যাদি করা যাবে।